Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

স্ট্রুপ টেস্ট (The Stroop test)

আমরা হাঁটার সময় আমাদের হাত কিভাবে নড়াচড়া করছে এই বিষয়ে খুব কমই মনোযোগ দেই। হাঁটা আমাদের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে যাবার একটি সরল উদ্দেশ্য সাধন করে থাকে। হাঁটা আর এর সাথে হাত নাড়ানো হল এক ধরণের সেমি-অটোমেটিক এবং উদ্দেশ্যচালিত (goal directed) আচরণ। কিন্তু আমরা যদি কোন কগনিটিভ বা চিন্তার সাথে সম্পর্ক আছে এমন কাজ করি, তাহলে হাঁটার সাথে আমাদের হাতের দোলানোর সঙ্গতিতে সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি ফিল্ডের নিউরোসায়েন্টিস্টদের একটি দল একটি প্রোজেক্ট হাতে নেয়। কঠিন কাজগুলো করার সময় হাঁটার ক্ষেত্রে এর কিরকম প্রভাব পড়ে এটাকে বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে তারা আগ্রহী হয়েছিলেন। আর তারা এও জানতে চান, হাঁটার সময় এই অতিরিক্ত কাজগুলো করার ক্ষেত্রে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া বা সমন্বয় তৈরি করা সম্ভব কিনা।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীর মনোযোগ কোন বিষয় থেকে সরিয়ে নিতে যে কাজটি করতে দেয়া হয় তাকে স্ট্রুপ টেস্ট বলা হয়। ১৯৩০ এর দশকে জন রিডলি স্ট্রুপ প্রথম এই টেস্টের প্রস্তাব করেন। এখানে অংশগ্রহণকারীদেরকে একটি রং এর নাম লিখে দেখানো হয়, (যেমন “Green”), কিন্তু সেই শব্দটি অন্য রং এর কালি দিয়ে লেখা থাকে, (যেমন “Green” শব্দটি ধরুন কালো রং দিয়ে লেখা)। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীকে কেবল লেখাগুলোর রং কী সেটাই জিজ্ঞেস করা হয়। কিন্তু তারপরও
বেশিরভাগ ব্যক্তিই স্বয়ংক্রীয়ভাবেই শব্দটির রং না বলে, শব্দটিকেই পাঠ করেন। মানে, Green শব্দের রং কী জিজ্ঞেস করা হল, উত্তর হবে কালো, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ বললেন এর রং হচ্ছে সবুজ।


এই কাজ বা টাস্কটি হল একধরণের “ইন্টারফিয়ারেন্স” টাস্ক যেখানে মস্তিষ্ককে একই সাথে আসা একাধিক ও প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ স্টিমুলি বা সংবেদ নিয়ে সফলভাবে সঠিক উত্তরটি দিতে হয়। যেমন উপরের টাস্কটিতে একই সাথে বর্ণের নাম ও লেখা নামের রং এর দুটি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ সংবেদ মস্তিষ্কে প্রবেশ করানো হয়েছে। তাই এখান থেকে সঠিক উত্তরটি দেয়া হবে একটি ইন্টারফেয়ারেন্স টাস্ক। এই টাস্কটির সময় যে ব্রেইন নেটওয়ার্ক ও স্ট্রাকচার কাজ করে তা নিয়ে প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে, এবং এখান থেকে দেখা গেছে যে এই কাজের জন্য সাধারণত মস্তিষ্কের লেফট হেমিস্ফেয়ার বা বাম অর্ধাংশ জড়িত থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ